দেবজিৎ মুখার্জি: “আমার কোন ভয় নেই! আমি বেশি ভাবিনা।” গুজরাট বনাম রাজস্থান ম্যাচের পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ঠিক এমনটাই স্পষ্ট জানালেন উদীয়মান ক্রিকেটার বৈভব সূর্যবংশী। বছর ১৪ হলেও তিনি কাজ করে দেখিয়েছেন পরিণত ক্রিকেটারদের মতো। গুজরাটের দেওয়া পাহাড়ের সমান টার্গেটকে তিনি নিজের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের মাধ্যমে সহজ করে তোলেন এবং দলকে উপহার দেন জয়ের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। ৩৮ বল খেলে বৈভব করেন ১০১ এবং প্রথম ভারতীয় ক্রিকেটার হন যিনি সবচেয়ে কম বলে শতরান হাকিয়েছেন আইপিএলে।
এদিনের ম্যাচ ছিল রাজস্থানের ঘরের মাঠ জয়পুরের সাওয়াই মানসিং স্টেডিয়ামে। ‘প্লে-অফ’এ যেতে হলে এই মুহূর্তে সবকটি ম্যাচ জিততে হবে রাহুল দ্রাবিড়ের ছেলেদের। টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন রাজস্থান অধিনায়ক রিয়ান পাড়াগ। প্রথমে ব্যাট করে রীতিমত এক পাহাড়ের সমান লক্ষ্যমাত্রা দেয় গুজরাট। নির্ধারিত ২০ ওভারে, তাদের মোট সংগ্রহ চার উইকেটে ২০৯। সর্বোচ্চ ৮৪ রান করেন অধিনায়ক শুভমান গিল। এছাড়া অর্ধশতরানের ইনিংস আসে জস বাটলারের ব্যাট থেকেও।
তবে এরপর রান তাড়া করতে নেমে শুরু হয় ‘বেবি বস’ ম্যাজিক। গুজরাটের বোলারদের বিরুদ্ধে একেবারে পরিণত ক্রিকেটারদের মতো ব্যাটিং করতে শুরু করেন বৈভব। সকলের বিরুদ্ধেই তিনি বাউন্ডারি-ওভার বাউন্ডারি হাঁকান। অবশেষে আফগানিস্তানের তারকা স্পিনার রশিদ খানের বলে ছয় মেরে শতরান পূরণ করেন। বৈভব শতরান করতেই আনন্দে ফেটে পড়ে গোটা স্টেডিয়াম। এখানেই শেষ নয়, এমনকি রাহুল দ্রাবিড় পর্যন্ত নিজের ফ্র্যাকচার ভুলে হুইল-চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ান। অন্যদিক থেকে এই ইনিংসের আনন্দ নেন দলের আরেক ওপেনার যশস্বী জয়েসওয়ালও। সবমিলিয়ে, বৈভবের এমন ইনিংস রাজস্থানকে ম্যাচ জেতায় এবং তিনিই হন ম্যাচের সেরা।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ‘বেবি বস’ নিজের ইনিংস প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে তাঁর কোন ভয় নেই এবং তিনি বেশি ভাবেন না। বৈভব বলেন, “আমার খুব ভালো লাগছে। এটা আমার প্রথম আইপিএল সেঞ্চুরি এবং তৃতীয় ম্যাচ। টুর্নামেন্টের আগে যে অনুশীলন করেছিলাম, সেটার ফল পাচ্ছি। আমি শুধু বল দেখি আর খেলি। জয়েসওয়ালের সঙ্গে ব্যাট করতে ভালো লাগে। উনি আমাকে বলেন কি করতে হবে এবং পজিটিভ করান। আমার স্বপ্ন ছিল আইপিএলে শতরান করার। আজ সেটা করেছি। আমার কোন ভয় নেই। আমি বেশি ভাবিনা। খেলার উপর ফোকাস করি।”