বড় মঞ্চে আসার আগে কিভাবে ভেঙেছিল আয়ুষের মন?

বড় মঞ্চে আসার আগে কিভাবে ভেঙেছিল আয়ুষের মন?

দেবজিৎ মুখার্জি: চলতি আইপিএলে অপ্রত্যাশিতভাবে একেবারে বিশ্রী ক্রিকেট তুলে ধরছে মহেন্দ্র সিং ধোনি নেতৃত্বাধীন চেন্নাই সুপার কিংস। বরাবরই শক্তিশালী দল হিসেবে পরিচিত সিএসকে গত দুটি মরশুমে হতাশ করেছে নিজেদের সমর্থক সহ গোটা ক্রিকেটমহলকে। এবারের টুর্নামেন্টে এখনো পর্যন্ত মোট ৯টি ম্যাচ খেলে তাদের ঝুলিতে দুটি জয় এবং ৭টি পরাজয়। ‘প্লে-অফ’ খেলার আশা একেবারেই নেই বললে চলে। পুরোটাই এখন অঙ্কের খেলা। দল রয়েছে পয়েন্টস টেবিলের দশ নম্বরে। অর্থাৎ একদম শেষে। সবমিলিয়ে, এক ছন্নছাড়া অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে মাহির দল।

তবে এতো ব্যর্থতার মাঝেও সকলের মন জিতেছেন দলের ১৭ বছর বয়সী নাবালক ক্রিকেটার আয়ুষ মাত্রে। এখনো পর্যন্ত দুটি ম্যাচ খেলেছেন তিনি এবং দুটিতেই নিজের মারকুটে ব্যাটিংয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে তাঁর অভিষেক ঘটে। ১৫ বলে ৩২ রানের একটি দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। দ্বিতীয় ম্যাচটি খেলেন গতকাল সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিরুদ্ধে। ১৯ বলে ৩০ রান হাকান তিনি। নাবালক হওয়া সত্ত্বেও যেভাবে আইপিএলের মতো এক কম্পিটিটিভ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে তিনি পরপর দুটি পাকাপোক্ত ইনিংস খেলেছেন, তা দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে সকলের।

তবে বড় মঞ্চে পৌঁছানোর আগে আয়ুষকেও বাকি ক্রিকেটারদের মতো অগ্নিপরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। তাঁর কোচ প্রশান্ত শেট্টি তাঁর জীবনের একটি ভেঙ্গে পড়া মুহূর্তের কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান কিভাবে সেই পরিস্থিতি সামাল দেন আয়ুষ। প্রশান্ত শেট্টি বলেন, “ওর মন প্রচন্ড খারাপ হয়েছিল যখন গতবছর এপ্রিল-মে মাসে ওর নাম ৩০জনের মধ্যে ওঠেনি ইন্ডিয়া অনূর্ধ্ব-১৯ ক্যাম্পে। ওর আত্মবিশ্বাসে ধাক্কা লেগেছিল। আমি ওকে বুঝিয়েছিলাম যে আরো সুযোগ আসবে। কয়েক সপ্তাহ বোঝানোর পর ও অবশেষে রাজি হয় নেটে আসতে। সেই সময় ওর ঠিকঠাক ব্যাটে-বলে কানেকশন হচ্ছিলোনা। তবে যখন ও আবার ঠিকঠাক শট মারতে শুরু করলো, তখন ও আবার নিজের কনফিডেন্স ফিরে পেলো।”

তিনি আরো বলেন, “গত একবছরে ও বেশ ভালোভাবে উঠেছে। থিম্মাইয়া ট্রফির পর ও ইরানি কাপ, রঞ্জি ও বিজয় হাজারে ট্রফি খেলে। এরপর ও অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ খেলে। আমি খুশি যেও দু’হাত দিয়ে সমস্ত সুযোগ আঁকড়ে নিয়েছে। ও এখন মানসিকভাবে প্রচন্ড শক্তিশালী আর কখনো চাপে থাকেনা। ও ভালো পারফর্ম করা সত্ত্বেও এক্সাইটেড হয়ে যায়না। ওর টেম্পারমেন্টে অনেক উন্নতি হয়েছে, যা গত কয়েকমাসে ওকে সাহায্য করেছে ভালো পারফর্ম করতে। আমি জানতাম ও ভালো খেলবে। কিন্তু আইপিএলের অভিষেক ম্যাচে যে এমন আগ্রাসীভাবে খেলবে, তা ভাবতেও পারিনি। ম্যাচের পর ওর সঙ্গে কথা হয় এবং ও খুব খুশি। বিশেষ করে রোহিত শর্মার সঙ্গে কথা হওয়ার পর।”

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *