দেবজিৎ মুখার্জি: দিন যতো এগোচ্ছে ততই জমে উঠছে চলতি আইপিএল। প্রায় অধিকাংশ ম্যাচই হয়েছে হাড্ডাহাড্ডি। কোন দলই একে অপরকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ। ট্রফিকে পাখিরচোখ করে সকল ক্রিকেটারই নিজের সেরাটা উজাড় করে দিচ্ছে ময়দানে। যদিও শুধু ট্রফি যেটা একমাত্র লক্ষ্য নয়, ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও জাতীয় দলে নিজের জায়গা পাকাপাকি করার জন্যও সকলে মরিয়া হয়ে নিজের ১০০ শতাংশ দিচ্ছে। বলা যায়, বর্তমানে আইপিএল একটি বড় এবং মূল্যবান মঞ্চ সকল ক্রিকেটারের কাছে নিজেদেরকে প্রমাণ করার জন্য।
তবে রবিবার, ২০শে এপ্রিল, দুটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচই আনন্দ দিয়েছে স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শক থেকে শুরু করে দেশের ক্রিকেটপ্রেমী সকলকেই। বলতে গেলে, দুটিই একপ্রকার বদলার ম্যাচ ছিল। প্রথম ম্যাচে ফের মুখোমুখি হয় রজত পতিদারের আরসিবি ও শ্রেয়াস আইয়ারের পাঞ্জাব কিংস এবং দ্বিতীয় ম্যাচটি ছিল দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রোহিত শর্মার মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ও মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসের মধ্যে। দুটি ম্যাচই নিজেদের ঝুলিতে তুলতে সফল হয় গত মোকাবিলার পরাজিত দল, অর্থাৎ বেঙ্গালুরু ও মুম্বাই। এক কথায় বলতে গেলে আজ জয় হয়েছে রোহিত-বিরাটদের। টিকে থাকার লড়াইতে দুজনের কাছেই বদলা নেওয়া ছিল গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটাই তাঁদের দল করে দেখায়।
প্রথম ম্যাচে পাঞ্জাবকে ৭ উইকেটে হারায় আরসিবি। এদিন টসে জিতে প্রথমে পাঞ্জাবকে ব্যাটিং করতে পাঠায় বেঙ্গালুরু। তবে এদিন রিকি পন্টিংয়ের ছেলেদের থেকে যা আশা করা হয়েছিল, তা একেবারেই পাওয়া যায়নি। প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ছয় উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রান তুলে পাঞ্জাব। দলের কোন ব্যাটারই অর্ধশতরান হাকাতে পারেননি। আরসিবির বোলারদের সামনে রীতিমতো কষ্ট করতে দেখা গিয়েছে তাঁদের রান করতে।
রান তাড়া করতে নেমে বিরাটদের শুরুটা ভালো হয়নি। ফের দ্রুত প্যাভিলিয়নে ফিরে যান সল্ট। এরপর পাদিক্কালকে নিয়ে একটি বড় পার্টনারশিপ গড়েন বিরাট, যা বেঙ্গালুরুর জয় প্রায় নিশ্চিত করে দেয়। তবে ৩৫ বলে ৬১ রানের একটি ঝকঝকে ইনিংস খেলার পর আউট হন পাদিক্কাল। এরপর দ্রুত ফিরে যান পতিদারও। অবশেষে জিতের শর্মাকে সঙ্গে নিয়ে দলকে ফিনিশ লাইন পার করান কিং কোহলি। তিনি অপরাজিত থাকেন ৭৩ রানে এবং তাঁকেই ঘোষণা করা হয় ম্যাচের সেরা।
অন্যদিকে, দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় মুম্বাই ও চেন্নাই। আজকের ম্যাচ নিজেদের ঝুলিতে তোলেন রোহিত শর্মারা। এবং টসে জিতে সিএসকেকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠায় এমআই। শুরুটা খুব একটা ভালো হয়নি তাদের দ্রুত প্যাভিলিয়নে ফিরে যান দুই ওপেনার। এরপর একটি ছোট ও দ্রুতগতির ইনিংস খেলেন আয়ুশ মাত্রে। ১৫ বলে ৩২ রান করে তিনি ফিরে যান প্যাভিলিয়নে। তবে শিবম দুবে ও রবীন্দ্র জাদেজার অর্ধশতরানের ইনিংস দলকে এক লড়াকু টোটালে নিয়ে যেতে সফল হয়। নির্ধারিত ২০ ওভারে তাদের স্কোর দাঁড়ায় পাঁচ উইকেটে ১৭৬।
জবাবে রান তাড়া করতে নেমে রিকেল্টন তাড়াতাড়ি পড়ে গেলেও হাল সামলাতে সফল হন রোহিত শর্মা ও সূর্যকুমার যাদব। এদিন রোহিতের ব্যাট থেকে আসে রান যা দেখে রীতিমতো খুশি হয়েছেন তাঁর সমর্থকরা। স্কাইয়ের ব্যাট থেকেও এদিন বয়ে চার ও ছয়ের বন্যা। দুজনেই এদিন হাফ সেঞ্চুরি করেন। রোহিত অপরাজিত থাকেন ৭৬ রানে এবং সূর্য ৬৮তে। দুজনের এই দুর্দান্ত ইনিংস আনন্দ দিয়েছে গোটা ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামকে। ম্যাচের সেরা হন রোহিত।