দেবজিৎ মুখার্জি: রোহিত-বিরাট টেস্ট ও ২০ ওভারের ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ানোতে বিপদ দেখছেন ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা। বহু প্রশ্ন জন্ম নিয়েছে তাঁদের মনে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, এবার দুই তারকার জন্য কি রয়েছে পড়ে? পাশাপাশি, ২০২৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে খেলা হবে ওডিআই বিশ্বকাপ। সেক্ষেত্রে, অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা না থাকলে মহাসংকটে পড়তে পারে দল। কারণ প্রোটিয়াদের পিচে খেলা খুব একটা সহজ নয়। এমনকি, এখনো অনেক তারকা ক্রিকেটার দক্ষিণ আফ্রিকার পিচে রান করতে গিয়ে হিমশিম খান। সবমিলিয়ে, দুই তারকা ক্রিকেটারের সরে দাঁড়ানো একরকমের অশনি সংকেত বলে মনে করছেন অনেকে।
বিগত কয়েকটি টেস্ট সিরিজ থেকেই ব্যাট হাতে তেমন দাগ কাটতে সফল হননি ভারতীয় ক্রিকেট দলের দুই তারকা রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি। একটা সময়ে দুজনেই ছিলেন বহু বোলারের আতঙ্ক। কিন্তু সম্প্রতি তাঁদের ব্যাট কথা বলতে সফল হয়নি। সেই স্বাচ্ছন্দভাবে দুজনকেই রান করতে দেখা যায়নি। এখানেই শেষ নয়, যেই বলগুলিতে তাঁরা সহজে চার বা ছয় হাকাতেন, সেগুলিও করতে পারছেন না। বলতে গেলে, দুজনেই হাবুডুবু খেয়েছেন রান করতে গিয়ে। বিশেষ করে গত বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে দুজনের ব্যাটিং হতাশ করিয়েছে দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের। বিরাট কোহলি একটি শতরান পেলেও রোহিত শর্মা কিছুই করে দেখাতে পারেননি।
স্বাভাবিকভাবে এমন বিশ্রী পারফরমেন্সের জেরে রোহিত ও বিরাট দুজনকেই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মগুলিতেও একাংশ দাবি করেছেন যে দুজনের অবসর নেওয়ার সময় এসে গেছে। যদিও শুধু নেটিজেন নন, বহু প্রাক্তন ক্রিকেট তারকাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দুজনের জঘন্য ব্যাটিং নিয়ে। একদিনের ক্রিকেটে ভালো পারফর্ম করা সত্ত্বেও তা ধামাচাপা দেওয়া যায়নি। অবশেষে দুজনে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন টেস্ট ক্রিকেট থেকে। রোহিত শর্মা নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরি থেকে এই ঘোষণাটি করেন। অন্যদিকে, বিরাট কোহলিও নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেল থেকে অবসরের কথা জানান। এরপরই একটা প্রশ্ন চারিদিকে ঘোরাফেরা করতে শুরু করে যে দুজনেই কি আদৌ অবসর নিতে ইচ্ছুক ছিল নাকি বোর্ডের তরফ থেকে জোর করা হয়েছে তাঁদের। সবমিলিয়ে, একটা রহস্য তৈরি হয়েছে দুই তারকার অবসর নিয়ে।
কিন্তু এই সবকিছুর মাঝেও ক্রিকেটপ্রেমীদের বড় চিন্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে যে রোহিত ও বিরাটের কাছে এখন পড়ে রয়েছে ওডিআই ক্রিকেট। পাশাপাশি, দুজনের বয়সও অনেক হয়ে গিয়েছে। ২০২৭ সালে বিশ্বকাপ খেলার সময় রোহিতের বয়স দাঁড়াবে ৪০ এবং বিরাটের ৩৮। সেক্ষেত্রে ‘এজ ফ্যাক্টর’ একটা বড় পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এছাড়া ভারতীয় ক্রিকেট দলের বর্তমান হেড কোচ গৌতম গম্ভীর তরুণ ক্রিকেটারদের বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন এবং সেই অনুযায়ী অনেকের ভয় এটাও রয়েছে যে বিরাট ও রোহিতকে হয়তো ছেঁটে ফেলা হতে পারে। সবমিলিয়ে, ক্রিকেটপ্রেমীদের একাংশ মনে করছেন যে কালো মেঘ ধেয়ে আসছে দলের দিকে। দুই তারকার না থাকা অভিভাবকহীন হওয়ার সমান। এবার দেখার বিষয় যে কিভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। বিরাট ও রোহিত কি পারবেন ২০২৭ সালের একদিনে বিশ্বকাপ খেলতে? তা বলবে সময়।